ব্যান্ডউইথ কি – ব্যান্ডউইথ এর কাজ কি?

ব্যান্ডউইথ কি – ব্যান্ডউইথ এর কাজ কি? Posted inTech Blog ব্যান্ডউইথ কি – ব্যান্ডউইথ এর কাজ কি?

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক – পাঠিকা বন্ধুরা , আজ আমি এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যেটা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা বা জানলেও খুব একটা ভালো বুঝিনা। তাই আজকের এই পোস্টে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করবো , বিষয়টি হচ্ছে  ব্যান্ডউইথ। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

ব্যান্ডউইথ হলো এমন একটি মাপকাঠি যা নির্দিষ্ট সময়কালে ডেটা পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয় থাকে। এটি উপলব্ধ ডেটা পরিমাণের মাধ্যমে একটি নেটওয়ার্ক লিঙ্ক বা ইন্টারনেট কানেকশনের প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে। ব্যান্ডউইথ মাপকাঠি হিসাবে উপযুক্ত একক বিট/সেকেন্ড (bps), কিলোবিট/সেকেন্ড (kbps), মেগাবিট/সেকেন্ড (Mbps), গিগাবিট/সেকেন্ড (Gbps) ইত্যাদি ব্যবহার হয়। অর্থাৎ, ব্যান্ডউইথ বলতে বোঝায় একটি নেটওয়ার্ক কনেকশনে প্রতিস্থানের সময়কালে প্রেরিত ও গ্রহণযোগ্য ডেটা পরিমাণের হিসেবে। ব্যান্ডউইথ বন্ঠন করে প্রদান করা হয় যাতে বিভিন্ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ উপলব্ধ থাকে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা যা ওয়েবসাইট সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যান্ডউইথ কি?

ব্যান্ডউইথ হলো একটি নেটওয়ার্ক কানেকশনে ডেটা পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত সর্বোচ্চ তথ্য পাঠানোর গতি। এটি পরিমাপ করার জন্য হের্টজ (Hz) এবং বিট (bps) এ প্রকাশ করা হয়। যখন আপনি ইন্টারনেটে সংযোগ গ্রহণ করেন তখন আপনার ইন্টারনেট সংযোগের গতি একটি মৌলিক অংশ হয়। ব্যান্ডউইথ মাপ করা হয় ডেটা পাঠানোর জন্য প্রতিসেকেন্ডে যে পরিমাণ তথ্য পাঠানো যায়।

আপনার ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট সংযোগের গতি নির্ধারণ করে এবং প্রতিসেকেন্ডে পাঠানো যাবে ডেটা পরিমাণ সীমাবদ্ধতা স্থাপন করে থাকে। মধ্যবর্তী ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিসেকেন্ডে পাঠাতে পারে ডেটা পরিমাণের একটি সীমা স্থাপন করে যা ব্যান্ডউইথ হিসাবে পরিচিত আমাদের কাছে। প্রতিসেকেন্ডে পাঠানো যাবে ডেটা পরিমাণ ব্যান্ডউইথের উপর নির্ভর করে ইন্টারনেট ব্যবহারের গতি, স্বপ্নময় সংগ্রহ করা ভিডিও, ওয়েব পেজ লোড ইত্যাদি কাজ হয়ে থাকে।

তবে আর ও একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো যে, একটি ওয়েব হোস্টিং প্যাকেজের যে নির্দিষ্ট ব্যান্ডউইথ লিমিট থাকে তা প্রতি মাসের শুরুতে নতুন করে লিমিট শুরু হয়। যেমন একটি হোস্টিং প্যাকজে যদি ১০০ জিবি ব্যান্ডউইথ লিমিট থাকে এবং সেই ব্যান্ডউইথ লিমিট যদি মাসের ২৫ বা ২৮ বা মাসের যে কোন দিন যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে সেই ওয়েব সাইটে ব্যান্ডউইথ লিমিট না বাড়ানো পর্যন্ত কেউ ভিজিট করতে পারবে না। তখন ব্যান্ডউইথ লিমিট বাড়ালে আবার ওয়েব সাইটে ভিজিট কতে পারবে। আবার প্রতি মাসের শুরুতে থেকে ব্যান্ডউইথ যা ব্যবহার হয়েছে তা আবার প্রথম থেকে শুরু হবে তবে এর জন্য মাসের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হলে হোস্টিং প্রোভাইডার এর সাথে যোগাযোগ করে ব্যান্ডউইথ লিমিট বাড়াতে হবে বা বাড়িয়ে নিতে হবে।

আরও পড়ুন: ন্যানো টেকনোলজি কি ?

ওয়েব সাইটের ব্যান্ডউইথ কিভাবে কাজ করে ?

যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বা করবে এবং সার্ভার থেকে ডেটা ডাউনলোড করে সেটি ব্যান্ডউইথ ব্যয় করে। ধরুন, একটি ওয়েবপেজ সাইজ যদি ১ মেগাবাইটের হয় এবং কেউ ওয়েবপেজটি ভিজিট  করে তখন সেটি ১ মেগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যয় করবে।

সবচেয়ে কমন ওয়েবসাইট হোস্টিং প্যাকেজগুলি ব্যান্ডউইথের সীমা সাপেক্ষে বিক্রি করা হয় বা বিক্রি করে থাকে। বিক্রয়কৃত ব্যান্ডউইথের সীমা সাধারণত মাসিক বা বার্ষিক হতে পারে বা হয়ে থাকে। আপনার যদি ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক হয় বা আসে তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য বেশি ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হবে, তখন কিন্তু আপনার হোস্টিং সরবরাহকারী আপনাকে আরও বেশি ব্যান্ডউইথ প্রদান করতে বলবে এবং সেটির জন্য আপনাকে অতিরিক্ত খরচও প্রদান করতে হবে।

ব্যান্ডউইথ কত প্রকার?

ব্যান্ডউইথ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে নিচে  সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো:

ন্যারো ব্যান্ডউইথ (Narrowband): ন্যারো ব্যান্ডউইথ অত্যন্ত সংকোচিত ব্যান্ডউইথ প্রদান করে এবং প্রতিসেকেন্ডে মাত্র কিছু কিলোবিট পরিমাণের ডেটা পাঠাতে সক্ষম হয়। এটি প্রাকৃতিক দূরত্ব প্রচুর প্রদানকারী যেমন রেডিও কমিউনিকেশন ও ওয়ান ডায়ালাপ কনেকশনে ব্যবহৃত হয়।

ব্রডব্যান্ড (Broadband): ব্রডব্যান্ড ব্যান্ডউইথ উচ্চ গতি ও প্রতিসেকেন্ডে বেশী ডেটা পাঠাতে সক্ষম হয়। এটির গতিবিধি যেমন DSL (Digital Subscriber Line), কেবল মধ্যম (Cable Modem), ওয়াইফাই (Wi-Fi), ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক (Fiber Optic Network) ইত্যাদি ব্যবহার করে ব্যান্ডউইথ প্রদান করে থাকে।

ওয়াইডব্যান্ড (Wideband): ওয়াইডব্যান্ড ব্যান্ডউইথ অত্যন্ত প্রশস্ত এবং প্রতিসেকেন্ডে অনেক বেশী ডেটা পাঠাতে সক্ষম হয়। এটি বাহিরে বিশাল ব্যান্ডউইথ প্রদান করতে সক্ষম। যেমন ক্যাবল ইন্টারনেট, ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ইত্যাদি।

প্রতিটি ব্যান্ডউইথ এক একটি শ্রেণিতে একটি নির্দিষ্ট ডেটা পাঠানোর ক্ষমতা বা গতিতে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে এবং বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উপায়ে প্রদান করা হয়। যেমন ধরুন, নেটওয়ার্ক সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ, মোবাইল ডেটা, টেলিভিশন ক্যাবলিং, প্রিন্টার শেয়ারিং ইত্যাদি বিভিন্ন প্রযুক্তিতে।

আরও পড়ুন: ইউনিকোড কি এবং কিভাবে কাজ করে

ব্যান্ডউইথ কিভাবে কাজ করে ?

ব্যান্ডউইথ কাজের ক্ষেত্রে সম্প্রতি ডিজাইন করা নেটওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেমে, ডেটা পাঠানো হয় ইউনিটের মাধ্যমে যার জন্য নেটওয়ার্ক প্রোটোকল ব্যবহার করা হয় বা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সাধারণত, ডেটা একটি ডিজিটাল রূপে তালিকায় রয়েছে যা একটি বাইনারি সিকুয়েন্স হিসাবে প্রতিনিয়ত প্রেরণ হয় বা গ্রহণ হয়। ব্যান্ডউইথ হল ডেটা পাঠানো যে মাত্রা যা একটি নেটওয়ার্ক সংযোগের সাথে মিলিত হয়। যখন আপনি ওয়েবপেজ লোড করতে চান বা ভিডিও স্ট্রিমিং দেখতে চান তখন আপনার ডিভাইস ও সার্ভারের মধ্যে ডেটা পাঠানো হয় ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে। আপনার ইন্টারনেট সংযোগের ব্যান্ডউইথ পর্যায়ক্রমে এই ডেটা পাঠানো হয় এবং সার্ভার থেকে আপনার ডিভাইসের মধ্যে প্রতিস্থাপিত হয়। ব্যান্ডউইথ উচ্চ হলে বেশি ডেটা একবারে পাঠানো যায় এবং তাতে গতি ও কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। অপরদিকে ব্যান্ডউইথ যদি উচ্চ ক্ষমতা না হয় তাহলে বেশি ডেটা একবারে পাঠানো যায়না এবং তাতে গতি ও কার্যক্ষমতা খুব একটা বেশি থাকে না।

উদাহরণস্বরূপ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথ আপনার ইন্টারনেট সংযোগের দ্বারা প্রতিসেকেন্ডে পাঠানো মেগাবিটের পরিমাণ ডেটা নির্ধারণ করে। যদি আপনার একটি উচ্চ ব্যান্ডউইথ সংযোগ থাকে তাহলে আপনি দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগ, ডাউনলোড বা ভিডিও স্ট্রিমিং এর মতো অভিজ্ঞতাগুলো দ্রুত অনুভব করতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনার ব্যান্ডউইথ কম থাকে, তাহলে ইন্টারনেট সংযোগ মেগাবিটে প্রতিসেকেন্ডে খুব স্লো হতে পারে এবং ডেটা প্রতিস্থাপনের বেশ সময় লাগতে পারে।

শেষ কথা

আশা করি আজকের পোস্টি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে এবং এখান থেকে  একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন।বা তাই আপনাদের কাছ থেকে যথাযথ মন্তব্য আশা করছি। আজ এখানেই বিদায় নেয়ার আগে একটি  অনুরোধ পোস্টটি শেয়ার করবেন যাতে আপনার আশেপাশের মানুষজন বিষয়টি সম্পর্কে  জানতে জানতে পারে।