ইউনিকোড কি এবং কিভাবে কাজ করে

ইউনিকোড কি এবং কিভাবে কাজ করে

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কত কিছুই না ব্যবহার করি কিন্তু কতগুলোর নাম আমরা জানি বলুন তো? বা এর সঠিক ব্যবহার থেকে শুরু করে আরো ওমেক কিছু। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি যেটি কিনা আমরা সবাই ব্যবহার করে থাকি , যেটা আমাদের জীবনকে অনেকটা সহজ করে তুলেছে আর সেটি হচ্ছে উনিকোড।

আজকের এই পোস্টে উনিকোড সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো , তো চলুন শুরু করা যাক।

ইউনিকোড কি

ইউনিকোড এর পূর্ণরূপ হলো Universal Code. বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটারের কোডভুক্ত করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো একটি মান তৈরি করেছেন যাকে আমরা ইউনিকোড বলে থাকি। একে সার্বজনীন কোডও বলা যায় । বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী প্রচলিত অ্যাসকি কোডের পাশাপাশি ইউনিকোড সিস্টেম চালু হয়েছে। এটি ১৬ বিট কোড।

বিভিন্ন ধরণের ক্যারেক্টার ও টেক্সটকে প্রকাশ করার জন্য ইউনিকোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ২১৬ = ৬৫৫৩৬ টি অদ্ববিতীয় চিহ্নকে নির্দদিষ্ট করা যায়। ১৯৯১ সালে অ্যাপল কম্পিউটার কর্পোরেশন এবং Xerox Corporation এর একদল কম্পিউটার প্রকৌশলী পৃথিবীর সব ভাষাভাষীর জন্য তাদের ভাষায় কম্পিউটিং সহজ করার জন্যে যৌথভাবে ইউনিকোড উদ্ভাবন করেন। ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম এর সদস্য হয়ে বাংলা ভাষাও ইউনিকোডভুক্ত হয়েছে।

ইউনিকোড কিভাবে কাজ করে

আমরা জানি যে, ইউনিকোড লিখতে সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়ে থাকে। বাংলাদেশে অভ্র (Avro) এবং বিজয় (Bijoy) দিয়ে ইউনিকোড টাইপ করতে হয় এটা আমরা জানি আবার অনেকে জানি না। এ দুটো সফটওয়্যার তাদের নিজস্ব কয়েকটি উপায়ে ইউনিকোড টাইপ করে থাকে। আমাদের একটি ভুল ধারণা ইউনিকোডকে আমরা অভ্র বলে থাকি, আসলে অভ্র হচ্ছে ইউনিকোড

লিখার একটি মাধ্যম। উনিকোডে  লিখতে অভ্র সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয়। অভ্র ব্যতিক্রম যে কাজটি করেছে তা হচ্ছে অভ্র ফোনেটিক(English to Bangla)। আপনি অভ্র চালু করে যে কোন ধরণের বাংলা শব্দ ইংরেজিতে লিখবেন সেটা বাংলা হয়ে যাবে। বাংলা হয়ে যাওয়া ওই অক্ষর বা বাক্যটি মূলত ইউনিকোড হয়ে আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে দেখা যায়। অভ্র তাদের প্রথম ভার্সনে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করে। বিজয়ের আপত্তির মুখে পরবর্তী সংস্করণে বিজয় কীবোর্ড তুলে দেয়। অভ্র তে আরো কয়েকটি টাইপ করার মাধ্যমে (লেআউট) রয়েছে- Avro Easy, Bornona, National (Jatiyo),

ইউনিকোড (Unicode) ব্যবহার

বিজয় দিয়ে সাধারণত আমরা SutonnyMJ’র মতো ফন্টগুলো সিলেক্ট করে বাংলা টাইপ করি। সে ক্ষেত্রে CTRL + ATL + B ব্যবহার করা হতো বাংলা লেখার জন্য। বাংলা লেখার এ মাধ্যমকে বলা হয় ANSI (এ-এন-এস-আই)। বিজয় কীবোর্ড সফটওয়্যারও তাদের ANSI’র সাথে সাথে ইউনিকোড অ্যাড করে। তারা CTRL + ATL + V চেপে বিজয় পুরোনো কীবোর্ড টাইপ (লেআউট ) ব্যবহার করে #ইউনিকোড সিস্টেম চালু করে।

ইউনিকোড (Unicode) ফন্ট

SutonnyMJ, KongshoMJ, BongshaiMJ সহ আরো শতাধিক ফন্ট আছে, যা দিয়ে বিজয় ফন্টগুলো স্টাইলিশ করা হয়, ঠিক তেমনি ইউনিকোড ফন্টকেও অনেক ইউনিকোড ফন্ট দিয়ে স্টাইলিশ করা যায়। নিকোষ বহুল প্রচলিত ফন্ট যা কিনা বাংলাদেশে সরকারিভাবে ব্যবহার করা হয়। সরকারি অনেক অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, ওয়েবসাইটে ফন্টটি ব্যবহার করে থাকে। ইউনিকোড কিন্তু শুধুমাত্র অক্ষরই না। ফেসবুকসহ অন্যান্য চ্যাটিং প্লাটফর্মে আমরা যে ইমুজিগুলো দেখি ওইগুলোও কিন্তু ইউনিকোড হওয়াতে আমাদের  কম্পিউটার বা মোবাইলে দেখতে পাই।

ইউনিকোড ফন্ট ডাউনলোড লিঙ্ক : https://www.omicronlab.com/bangla-fonts.html

কিভাবে ইউনিকোড (Unicode) ফন্ট কম্পিউটারে ইন্সটল করবেন

  • ইউনিকোড (Unicode) ফন্ট ttf ফরম্যাটে থাকে। জীপ করা থাকলে আনজীপ করতে হবে এরপর ttf ফন্টটি সিলেক্ট করে Copy করতে হবে।
  • মাই কম্পিউটার/কম্পিউটার/ দিস পিসি হতে উইন্ডোজ ড্রাইভের প্রবেশ করতে হবে, বেশিরভাগ উইন্ডোজ ড্রাইভ C: হয়ে থাকে। C: ড্রাইভ থেকে Windows হয়ে Fonts ফোল্ডারে প্রবেশ করুন এবং আপনার Copy করা ফন্টটি Paste করুন। লোকেশানটা এমন হবে – C:WindowsFonts

ইউনিকোড (Unicode) জীবন বৃত্তান্ত

ইউনিকোড প্রথম তৈরি হয় ১৯৮৮ সালে এবং পরবর্তীতে এটি বাজারে আসে ১৯৯১ সালে। সারা পৃথিবীর মানুষকে সহজে এ সেবা প্রদানের জন্য Open Source হিসেবে এটি প্রকাশ করা হয়। ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম নামক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান হতে প্রতিনিয়ত এ ইউনিকোড ফন্টের আপডেট বের করতে কাজ করে যাচ্ছে। ইউনিকোডের প্রতিটি অক্ষর ১৬বিট হওয়াতে ফাইল সাইজ বড় হয়।

ইউনিকোডের ওয়েবসাইট থেকে আরো বিস্তারিত জানতে পারেন।

ইউনিকোডের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা

ইউনিকোডের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা হলো –

  • এটি ১৬ বিট বিশিষ্ট কোড, একারণে এর সাহায্যে 216 বা ৬৫৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়।
  • ছোট বড় পৃথিবীর যেকোনো ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করা যায়।
  • ক্যারেক্টারকে কোড করার জন্য ১৬ টি বিটই ব্যবহার করা হয়।
  • বিশ্বের শত শত ভাষার হাজার হাজার বর্ণ, চিহ্নের জন্য এ কোড ব্যবহৃত হয়।
  • এর প্রথম ২৫৬ টি কোড অ্যাসকি ২৫৬ টি কোডের অনুরূপ।
  • এটি থেকে অন্যান্য স্ট্যান্ডার্ড কোডে পরিবর্তন করা যায়।
  • Example – A= u0041 ইত্যাদি ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *