দুর্দান্ত ফিচারের নতুন ফোন নিয়ে হাজির Vivo

Vivo Y37

ভিভো সম্প্রতি তাদের ‘ওয়াই’ সিরিজে দুটি নতুন ফোন লঞ্চ করেছে। এই ফোনগুলি হলো Vivo Y37 5G এবং Vivo Y37m 5G, যা চীনে লঞ্চ করা হয়েছে। এই ফোনগুলি লো বাজেট সেগমেন্টে MediaTek Dimensity 6300 চিপসেট সহ পেশ করা হয়েছে। Vivo Y37 এবং Y37m ফোনের ফিচার, স্পেসিফিকেশন এবং দাম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Vivo Y37 ফোনের দাম

  • 4GB RAM + 128GB স্টোরেজ – ১১৯৯ ইউয়ান (প্রায় ১৩,৭৯০ টাকা)
  • 6GB RAM + 128GB স্টোরেজ – ১৪৯৯ ইউয়ান (প্রায় ১৭,২৫০ টাকা)
  • 8GB RAM + 128GB স্টোরেজ – ১৭৯৯ ইউয়ান (প্রায় ২০,৬৯০ টাকা)
  • 8GB RAM + 256GB স্টোরেজ – ১৯৯৯ ইউয়ান (প্রায় ২২,৯৯০ টাকা)
  • 12GB RAM + 256GB স্টোরেজ – ২০৯৯ ইউয়ান (প্রায় ২৪,১৫০ টাকা)

Vivo Y37m ফোনের দাম

  • 4GB RAM + 128GB স্টোরেজ – ৯৯৯ ইউয়ান (প্রায় ১১,৪৯০ টাকা)
  • 6GB RAM + 128GB স্টোরেজ – ১৪৯৯ ইউয়ান (প্রায় ১৭,২৫০ টাকা)
  • 8GB RAM + 256GB স্টোরেজ – ১৯৯৯ ইউয়ান (প্রায় ২২,৯৯০ টাকা)

চীনে Vivo Y37 এবং Y37m ফোনগুলি Distant Green Mountains, Lingguang Purple এবং Moon Shadow Black কালার অপশনে পেশ করা হয়েছে। এই দুটি ফোন ভারতে লঞ্চ হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

Vivo Y37 এবং Y37m ফোনের স্পেসিফিকেশন

ডিসপ্লে:

এই দুটি ফোনেই ২০.১৫:৯ আসপেক্ট রেশিওযুক্ত এবং ১৬১২ x ৭২০ পিক্সেল রেজোলিউশন সাপোর্টেড ৬.৫৬-ইঞ্চির HD+ ওয়াটারড্রপ ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে। উভয় ফোনের স্ক্রিন LCD প্যানেল দিয়ে তৈরি এবং ৯০Hz রিফ্রেশ রেটে কাজ করে।

প্রসেসর:

Vivo Y37 এবং Y37m ফোনে ৬ ন্যানোমিটার প্রসেসে তৈরি ২.৪GHz ক্লক স্পীডযুক্ত MediaTek Dimensity 6300 অক্টাকোর প্রসেসর যোগ করা হয়েছে। গ্রাফিক্সের জন্য এতে Mali-G57 জিপিইউ রয়েছে।

স্টোরেজ:

এই দুটি ফোনে Memory Fusion টেকনোলজি দেওয়া হয়েছে, যার সাহায্যে এই ফোনে ফিজিক্যাল RAM এর সঙ্গে ভার্চুয়াল RAM যোগ করা যায়। Vivo Y37m ফোনে ৮GB RAM এবং Vivo Y37 ফোনে ১২GB RAM যোগ করা হয়েছে। উভয় ফোনে ১২৮GB এবং ২৫৬GB ইন্টারনাল স্টোরেজ দেওয়া হয়েছে।

ক্যামেরা:

ফটোগ্রাফির জন্য ফোনগুলিতে ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। এতে LED ফ্ল্যাশের সঙ্গে f/2.2 অ্যাপার্চারযুক্ত ১৩ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর এবং ফ্লিকার ইন্টারফেয়ারেন্স কমানোর জন্য সেকেন্ডারি অ্যান্টি স্ট্রোব সেন্সর যোগ করা হয়েছে। এছাড়া সেলফি ও ভিডিও কলের জন্য Vivo Y37 এবং Vivo Y37m উভয় ফোনে ৫ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাটারি:

পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য উভয় ফোনে USB টাইপ C পোর্ট এবং ১৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড ৫,০০০ mAh ব্যাটারি রয়েছে।

ওএস:

Vivo Y37 5G এবং Vivo Y37m 5G ফোনগুলি অ্যান্ড্রয়েড ১৪ এবং OriginOS ১৪ সহ পেশ করা হয়েছে।

অন্যান্য ফিচার:

উভয় ফোন ডুয়েল ৫জি সিম সাপোর্ট করে। এতে ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক, OTG, ব্লুটুথ, ওয়াইফাই এবং সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের মতো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ফিচার যোগ করা হয়েছে।

বিস্তারিত জানুন

ডিসপ্লে এবং ডিজাইন:

Vivo Y37 এবং Y37m ফোনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি তাদের মূল্যের তুলনায় বেশ ভালো। ৬.৫৬ ইঞ্চি HD+ ওয়াটারড্রপ ডিসপ্লে এবং ৯০Hz রিফ্রেশ রেট ব্যবহারকারীদের জন্য স্লিক এবং মসৃণ স্ক্রোলিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে। LCD প্যানেলটি AMOLED এর মতো জীবন্ত না হলেও, এর উজ্জ্বলতা এবং স্বচ্ছতা ভালো।

পারফরম্যান্স:

MediaTek Dimensity 6300 চিপসেট এবং Mali-G57 GPU এর সংমিশ্রণে এই ফোনগুলি দৈনন্দিন কাজ সহজে পরিচালনা করতে সক্ষম। ব্রাউজিং, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের পাশাপাশি ক্যাজুয়াল গেমিং করার সময়ও ফোনগুলি ল্যাগ ছাড়াই পারফর্ম করে। ৬ ন্যানোমিটার প্রসেস প্রযুক্তির কারণে এই চিপসেট শক্তি দক্ষতা বাড়িয়ে দেয়, যা ব্যাটারির লাইফকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

স্টোরেজ এবং RAM:

Memory Fusion টেকনোলজির ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা। এই প্রযুক্তি সিস্টেমকে ভার্চুয়াল RAM হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়, যা মাল্টিটাস্কিংয়ের পারফরম্যান্স উন্নত করে। ১২GB RAM এবং ২৫৬GB স্টোরেজ অপশন থাকায় ব্যবহারকারীরা প্রচুর পরিমাণে অ্যাপ, মিডিয়া এবং ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই ফ্লেক্সিবিলিটি ফোনটিকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী করে তোলে।

ক্যামেরা:

ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপটি, যদিও অত্যাধুনিক নয়, দৈনন্দিন ফটোগ্রাফি প্রয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত। ১৩ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর ভালো আলোতে ভালো ছবি তুলতে সক্ষম। অ্যান্টি স্ট্রোব সেন্সর একটি অনন্য সংযোজন যা কৃত্রিম আলোতে ভিডিও রেকর্ড করার সময় ফ্লিকার ইন্টারফেয়ারেন্স কমাতে সহায়ক। ৫ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা সাধারণ সেলফি এবং ভিডিও কলের জন্য পর্যাপ্ত।

ব্যাটারি এবং চার্জিং:

৫,০০০ mAh ব্যাটারি এই ফোনগুলির একটি শক্তিশালী দিক, যা সহজেই একটি পুরো দিন টিকতে সক্ষম। ১৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টের কারণে ব্যবহারকারীরা দ্রুত ব্যাটারি চার্জ করতে পারবেন, যা ডাউনটাইম কমিয়ে দেয়।

সফটওয়্যার:

অ্যান্ড্রয়েড ১৪ এবং OriginOS ১৪ ব্যবহার করে ফোনগুলি সর্বশেষ সফটওয়্যার ফিচার এবং সিকিউরিটি আপডেট পায়। OriginOS এর ইউজার ইন্টারফেস মসৃণ এবং কাস্টমাইজেশন অপশন সমৃদ্ধ, যা ব্যবহারকারীদের ফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও ব্যক্তিগত করে তোলে।

সংযোগ:

ডুয়েল ৫জি সাপোর্ট ব্যবহারকারীদের দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড এবং ভালো নেটওয়ার্ক রিলায়েবিলিটি প্রদান করে। ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক, OTG সাপোর্ট, ব্লুটুথ এবং সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের সংযোজন ফোনটির ব্যবহারের সুবিধাকে বাড়িয়ে দেয়।

চূড়ান্ত মতামত:

Vivo Y37 এবং Y37m ফোনগুলি সামগ্রিকভাবে একটি ভালো মূল্য প্রদান করে। তাদের ডিসপ্লে, কার্যক্ষমতা, পর্যাপ্ত স্টোরেজ অপশন এবং শক্তিশালী ব্যাটারির সংমিশ্রণে ফোনগুলি বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। উচ্চ-মানের স্মার্টফোনের অনেক অত্যাধুনিক ফিচার না থাকলেও, তারা নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যে একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ প্রদান করে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *